-
আমেদেয়ো মদিলিয়ানি: বিষণ্ণ সৌন্দর্য-প্রেমিক এক শিল্পী
আমেদেয়ো মদিলিয়ানি [১৮৮৪-১৯২০] সেই সব আত্মনিবেদিত শিল্পীর একজন যাঁরা অনিচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের কেন্দ্র করে এক রোমান্টিক কিংবদন্তির জন্ম দেন। মদিলিয়ানি-কে ঘিরে তাঁর অজ্ঞাতসারে যে-কিংবদন্তি গড়ে ওঠে তা এই রকম :
এক দিব্যকান্তি, দরিদ্র, অপচিত ও ক্ষয়িত চিত্রকর যিনি অকালমৃত্যুর শিকার হন অত্যধিক মদ্যপান, মাদকসেবন ও মাত্রাতিরিক্ত শ্রমের ফলে। এই রোমান্টিক কিংবদন্তি আমাদের আধুনিকতাবাদী চেতনার সঙ্গে সংশ্লেষিত হয়ে রচনা করে এক সম্মোহক বিভামণ্ডল, যার ফলে মদিলিয়ানি-র ব্যক্তিজীবন ও শিল্পকর্ম উপেক্ষা করা অসাধ্য হয়ে ওঠে।
স্বল্পায়ু এই শিল্পী বিশ শতকের গোড়ায় আধুনিকতাবাদী শিল্প-আন্দোলনের তুঙ্গপর্বে বিরাজ করলেও তাঁর মধ্যে লক্ষ করি বহু শিল্পী ও শিল্পপ্রবাহের প্রভাব ও সমন্বয়, সহাবস্থান ও আত্মীকরণ। তারুণ্যধর্ম ও প্রতিভাবল— উভয়ই তাঁকে সাহায্য করে ভিন্নধর্মী শিল্পকলা ও শিল্পদর্শন দ্বারা সংক্রামিত ও সক্রিয় হতে। তাঁর মধ্যে আমরা লক্ষ করি বিভিন্ন শিল্পী ও শিল্পভাবের সমাবেশ।
তাঁর শিল্পরচনায় যেমন প্রতিনিধিত্বমূলক বৈশিষ্ট্য লম্বাটে মুখ এবং শরীরী গড়ন আর বক্ররেখা-বেষ্টিত ছন্দযুক্ত পরিণত শৈলী, তেমনই তাঁর নগ্নিকা ও প্রতিকৃতিচিত্রগুলির অন্তিম পর্যায়ের এক অমোচনীয় বিশিষ্টতা, সূক্ষ্ম নকশা এবং পেলব বর্ণপ্রয়োগের নিগূঢ়তার অপাপবিদ্ধ সৌন্দর্য তাড়িত করে আমাদের। হয়তো এই কারণেই জঁ ককতো তাঁর সম্পর্কে বলেন, “সেই বীরত্বময় যুগের সরলতম ও মহত্তম প্রতিভা।”
-
মুক্ত বাতায়ন স্মরণিকা জাদুঘর ‘স্মারক দুর্ঘটনা’
শিল্পী ঢালী আল মামুন একটি ব্যক্তিগত স্মৃতিচিহ্নকে সর্বজনীন শিল্পে রূপান্তরিত করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে সর্বজনীন শিল্প কী? সর্বজনীন ধারণাটি কি সর্বজনীন, নাকি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ভাবনার মধ্যে আবর্তিত হয়? সর্বজনীন কিছু হওয়া কি সম্ভব? এই সকল প্রশ্নকে উসকে দেওয়ার চেষ্টায় এই প্রকাশনা। একই সঙ্গে এই প্রকাশনা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের ভাস্কর্য চর্চার ধরনটিকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে, প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায় শিল্পী ঢালী আল মামুনকেও, যিনি দৃশ্যশিল্পকে দেখেন জ্ঞানকাণ্ডের অংশ হিসেবে।