-
Rohingya 2017 – 25 August
ছোটবেলায় আমার একটি স্ট্যাম্প বই ছিল, যেখানে অনেক স্ট্যাম্প সংগ্রহ করেছিলাম যার বেশিরভাগ বাংলাদেশের জাতীয় সংকটগুলোর উপর তৈরি, যেমন-মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা হত্যা। এই স্ট্যাম্পগুলো আমাকে সেই সংকটপূর্ণ দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। এবং এজন্যই, আমি আমার লেন্সের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট ২০১৭-এর একটি স্ট্যাম্প বুক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার আগের স্ট্যাম্প বইগুলি ব্যক্তিগত, তবে এই স্ট্যাম্প প্রকল্পটি সকলের জন্য তৈরি করা হয়েছে যাতে করে লোকেরা লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের এই মনুষ্যসৃষ্ট সংকটকে ভুলে না যায়।
– কাউসার হায়দার
-
অন ফটোগ্রাফি
সুজান সনটাগ এই গ্রন্থে তার সমকালের ইমেজ সংস্কৃতি, ইমেজ রাজনীতি এবং ইমেজ-মনস্তত্ত্ব কে বুঝতে নানা দিক থেকে এর ওপর আলো ফেলে দেখতে চেয়েছেন। বিশ শতকে, যখন দেখা বিষয়ক প্যারাডাইম পরিবর্তনের কাল মানব জাতির জন্যে, মানুষের দৃষ্টি গ্রাহ্যতা অভিজ্ঞতা এবং বোধের এক পরিণতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ক্রমাগত এই দৃষ্টিগ্রাহ্যতা দখল নিচ্ছে ব্যক্তি, সমাজ, বাস্তবতা, কামনা, বিবেক ও ভোগের-তখন অন ফটোগ্রাফি চিন্তাশীল মানুষকে দারুণ ভাবে উজ্জীবিত করতে পেরেছিল। অন ফটোগ্রাফিতে সনটাগ দেখিয়েছেন যে ফটোগ্রাফি নিজেই ইমেজের এমন এক প্রতিবেশ সৃষ্টিকরে যে, পৃথিবীর খণ্ডাংশগুলি তাদের প্রাসঙ্গিকতা এবং ইতিহাস থেকে স্থানচ্যুত হয়ে এক পরাবাস্তব দৃষ্টি গ্রাহ্যতায় পরিণত হয়।
-
আয়না কথা – আবীর আবদুল্লাহ
বাংলাদেশের আইকনিক ফটোসাংবাদিকদের যে লম্বা তালিকা, তার গ্রাফের উপর দিকে আবীর আবদুল্লাহর বাস। কাজের জায়গায় সোজা-সাপ্টা, বাহুল্য বর্জিত, ড্রামাহীন একজন আলোকচিত্রী।
নিজের ফটোগ্রাফি নিয়ে পরিষ্কার তাঁর লজিক এবং ব্যাখ্যা।“আমি এইভাবে দেখেছি.., বিশেষ কিছু দেখতে চাইনি…। যা আছে তাই…।”
তেমন তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা ছাড়াই সোজা-সাপ্টা কথার আলোকচিত্রী। কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ, দৃক, পাঠশালা, ই.পি.এ, ওয়ার্ল্ড প্রেস, আর্ট বনাম ফটোগ্রাফি এমন বিভিন্ন বিষয় নিয়েই ছাত্র-শিক্ষকের আলাপচারিতা-আয়না কথা।
-
ক্যামেরা লুসিডা
ক্যামেরা লুসিডা ফোটোগ্রাফি বিষয়ে সম্পূর্ণ নতুন এক চিন্তনের প্রস্তাবনা—হয়তো আলোকচিত্রিক দর্শনের সম্ভাবনা। ভীষণ উস্কানিমূলক, মৌলিকতায় আক্রান্ত, আলোকচিত্রের সকল ন্যারেটিভকে উপেক্ষা করে এ এক নৈরাজ্যকর গ্রন্থনা। গত তিন দশকে এই গ্রন্থ ফোটোগ্রাফি বিষয়ে এক শাস্ত্রীয় মর্যাদা লাভ করেছে। সম্ভবত ক্যামেরা লুসিডা ফোটোগ্রাফিকে মৃত্যু, মরণশীলতা, সময় এবং অস্তিত্ত্ব বিষয়ে এক নতুন অবস্থানে স্থাপিত করে। এই গ্রন্থ পাঠ করে ফোটোগ্রাফি সম্পর্কে কী জানা যায়? এ প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বরং লেখা যাক, ফোটোগ্রাফির অস্তিত্ত্ব এবং প্রবহমান সময়ের মধ্যে তার যে অংশগ্রহণ সে বিষয়ে ক্যামেরা লুসিডা আমাদের দৃষ্টি এবং চিন্তার প্রক্ষেপণকে নবায়নের প্রস্তাব করে।
-
ডিজিটাল ইমেজ রাজনীতি, নন্দনতত্ত্ব ও অন্যান্য
প্রযুক্তি কি প্রভাবিত করে নন্দনতত্ত্বকে? শিল্পের ভাষা এবং তার রাজনীতি কি বিবর্তিত হয় প্রযুক্তির প্রভাবে? ইমেজের ডিজিটাল রূপান্তর কি প্রযুক্তির পালা বদল না কি প্যারাডাইম শিফট? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে এই বইয়ের সূচিপত্র গড়ে উঠেছে; ক্রমে। এই সময়ে আমাদের সম্পর্কগুলো—ব্যক্তি, সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব এবং মহাবিশ্বের পরিধিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির ভাষায় বর্ণিত হচ্ছে। তার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ ডিজিটাল ইমেজে। এই ইমেজ মানুষের সৃষ্ট আগের সব ইমেজের চেয়ে ভিন্ন এভাবে যে, সে চূড়ান্তভাবে নমনীয়, পরিবর্তনীয় এবং সে ছাড়িয়ে যেতে পরে তার আদি স্রষ্টাকে এবং হয়ে পড়তে পারে প্রায় স্বয়ম্ভূ। ডিজিটাল ইমেজের প্রযুক্তি, নন্দনতাত্ত্বিক বাস্তবতা ও সম্ভাবনা, তার অ্যানার্কি আমাদের আগ্রহের বিষয়—এই গ্রন্থে।
-
তিনা মোদোত্তি শিল্প . রাজনীতি . জীবন
মৃত্যুর পর প্রায় চার দশক তিনা মোদোত্তি নামটি সর্বতোভাবে চাপা পড়ে থাকে। যা সর্বাংশে রাজনৈতিক, খানিকটা অবহেলারও। আশির দশকের গোড়া থেকে তিনা আবারও শিল্প-সংষ্কৃতি-রাজনীতির আলোচনায় ফিরে আসেন। ছেচল্লিশ বছরের আয়ুষ্কাল পেয়েছিলেন তিনা মোদোত্তি। এই অল্প সময়েই মঞ্চ ও চলচ্চিত্রাভিনেতা, আলোকচিত্রী এবং রাজনীতিক হিসেবে কর্মময় জীবন কাটিয়েছেন। ইতালিতে জন্মগ্রহণ করলেও, মেক্সিকোর শিল্প ও রাজনীতির ইতিহাসে তিনা অবিস্মরণীয়।
এই গ্রন্থটিতে তিনা মোদোত্তির বর্ণময় জীবন ও জীবনের সফলতা বা ব্যর্থতা বা প্রভাবসঞ্চারক হিসেবে তাঁর ভূমিকা ইত্যাদি কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উপরই আলোকপাত করা হয়নি সচেতনভাবে। বরং নির্মোহ জায়গা থেকে তাঁর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়কে তুলে ধরা হয়েছে, বিস্মৃত একটি জীবনের দিকে ফিরে তাকালে যেভাবে দেখা হয়। -
যে-ব্যথা আনজনের
যুদ্ধের ছবি আসলে কী কাজ করে? কোন ছবিগুলো দেখানো হচ্ছে বারবার? কারা দেখাচ্ছে? কাদের নিষ্ঠুরতা দেখানোই হচ্ছে না? কেমন প্রতিক্রিয়া বানিয়ে তোলা হচ্ছে? যুদ্ধের নিবারণ কি আদৌ সম্ভব? অন্যের দুর্দশার ছবি দেখতে দেখতে কি অসাড় হয়ে যাই আমরা? অভ্যস্ত হয়ে যাই? কারা এই ‘অন্য’রা? ‘আমরা’ই বা কারা? যুদ্ধে যাঁরা গিয়েছেন, যাঁরা আহত হয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, মারা গিয়েছেন, তাঁদের কীই বা বলার থাকতে পারে আমাদেরকে? প্রশ্ন তুলছেন সুজান সনটাগ।