-
Rohingya 2017 – 25 August
ছোটবেলায় আমার একটি স্ট্যাম্প বই ছিল, যেখানে অনেক স্ট্যাম্প সংগ্রহ করেছিলাম যার বেশিরভাগ বাংলাদেশের জাতীয় সংকটগুলোর উপর তৈরি, যেমন-মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা হত্যা। এই স্ট্যাম্পগুলো আমাকে সেই সংকটপূর্ণ দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়। এবং এজন্যই, আমি আমার লেন্সের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট ২০১৭-এর একটি স্ট্যাম্প বুক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার আগের স্ট্যাম্প বইগুলি ব্যক্তিগত, তবে এই স্ট্যাম্প প্রকল্পটি সকলের জন্য তৈরি করা হয়েছে যাতে করে লোকেরা লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের এই মনুষ্যসৃষ্ট সংকটকে ভুলে না যায়।
– কাউসার হায়দার
-
আয়না প্রথম অংশ
গালেয়ানো বলেছেন, “আমার বইগুলো, বিশেষ করে ‘মিররস’ লিখেছি এটা দেখানোর জন্য যে, বিশ্বের কোনো জায়গাই অন্য জায়গার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, কোনো মানুষই অন্য মানুষের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দাবি করে না। বিশ্বকে যারা নিয়ন্ত্রণ করে তারা আমাদের যৌথ স্মৃতিকে ছিন্ন করেছে, আমাদের বাস্তবতাকেও ছিন্ন করে চলেছে। প্রভাবশালী দেশগুলোকে শিখতে হবে, কীভাবে ‘নেতৃত্ব’ শব্দটা ‘বন্ধুত্ব’ দিয়ে বদলে ফেলা যায়।”
নিছক গল্প-বইয়ের বদলে এটি বিশ্ব-ইতিহাসের এক বিকল্প পাঠ। এর প্রতিটি গল্প নিয়েই গুরুগম্ভীর, রীতিমতো গবেষণামূলক দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখা যায়। গালেয়ানো হাঁটতে পারতেন সে পথে, যদিও তা কেতাবি মহলের বাইরে কেউ পড়ত না, পড়লেও মনে রাখত না। বদলে, তিনি পাঠককেই প্ররোচিত করেছেন গবেষণার পথে, এর প্রতিটি গল্পকে মনোযোগী পাঠক হয়তো বিভিন্ন সূত্রে যাচাই করে নিতে চাইবেন; যদি চান, সেখানেই লেখকের সার্থকতা।
-
আলিঙ্গনের বই
‘ভুলে যাওয়া স্বপ্ন’ গল্পে ক্লারিবেল তাঁর বান্ধবীর ভুলে যাওয়া স্বপ্নগুলোকে পুঁটুলি বেঁধে রেখেছিলেন। কিন্তু তাঁর বাচ্চারা সে-জায়গাটা খুঁজে পেয়ে যাওয়ায়, নাজেহাল ক্লারিবেল বাধ্য হন বান্ধবীকে ফোন করতেন-“তোমার স্বপ্নগুলো নিয়ে করবটা কী বলো তো?” ‘আলিঙ্গনের বই’তে এদুয়ার্দো গালেয়ানো গল্প থেকে গল্পে লাফিয়ে যান পাহাড়ি ঝোরার উপর আলগা পাথরে পা ফেলে ফেলে। পাঠককে বারবার এক স্বপ্ন থেকে ঝাঁকিয়ে তুলে আরেক স্বপ্নের আবর্তে ঠেলে দিয়ে। এই বই পড়া মানে স্বপ্নের পুঁটুলি বানানো শুরু। লেখকের স্বপ্ন, পাঠকের স্বপ্ন, স্বপ্নের সময়, বাস্তবের সময় ঘেঁটেঘুটে এক হয়ে যেতে থাকে। নাজেহাল পাঠক যদি পারতেন গালেয়ানোকে ফোন করতেন-“আপনার স্বপ্নগুলো নিয়ে করবটা কী বলুন তো?” আর গালেয়ানো হয়তো তখন জানাতেন যে, মত অবস্থাটা আসলে খুবই একঘেয়ে, এবং জীবন-মৃত্যু নিয়ে একটা নতুন বই লিখতে তিনি উৎসুক-যেমন জানিয়েছিলেন কোর্তাজার, গালেয়ানোকে, আরেক স্বপ্নের ভিতর, বিচিত্র আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে।
-
একটি নৈরাজ্যবাদী নৃবিজ্ঞানের খণ্ডচিত্র
নৈরাজ্যবাদী দর্শন বিশ্বব্যাপী পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও একাডেমিক ক্ষেত্রে তা একেবারে অনুপস্থিত বললেই চলে। একটি সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের প্রক্রিয়া ও কাঠামো সম্পর্কে ধারণা লাভের জন্য দীর্ঘকাল যাবৎ নৈরাজ্যবাদীরা নৃবিজ্ঞানীদের কাছে পরামর্শ চেয়ে এসেছেন। কিন্তু নৃবিজ্ঞানের ঔপনিবেশিক ইতিহাস এবং নৃবিজ্ঞানকে একটি রাজনৈতিক জ্ঞানকাণ্ডে রূপদানের ব্যাপারে নৃবিজ্ঞানীদের অনীহা বা সংকোচের কারণে তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। গ্রেবার তাঁর এই লেখায় নৈরাজ্যবাদ ও নৃবিজ্ঞানের সম্ভাব্য সম্পর্ককে তুলে ধরার মাধ্যমে যাচাই করার চেষ্টা করেছেন। এই লেখাটি সম্ভাব্যতার জগতে আটকে থাকা ‘নৈরাজ্যবাদী নৃবিজ্ঞানের’ বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োগ সম্পর্কে আমাদের ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে।
-
ক-বাবুর যত কথা
বের্টোল্ট ব্রেখট ক-বাবুর এই সমস্ত ‘কথা’ লিখেছিলেন দীর্ঘ সময় ধরে, গত শতকের বিশ থেকে পাঁচের দশক জুড়ে, বিপ্লব ও বিশ্বযুদ্ধের উত্তাল আবহে।
ক-বাবুর এ সমস্ত ‘কথা’ কখনও দু-এক লাইন, কখনও দু-এক অনুচ্ছেদেই শেষ। এ সবের মধ্যে কাহিনির আভাস থাকলেও বোঝা যায় যে লেখকের মূল লক্ষ্য কাহিনি বা আখ্যানের বর্ণনা নয়, বরং কোন ঘটনা বা আচরণ বা পরিস্থিতির চকিত ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ। সেদিক থেকে এ সবের ধরন প্রাচীন প্যারাবল বা নীতিসূত্রের মতো, কিংবা সংক্ষিপ্ত উপাখ্যান বা অ্যানেকডোটের মতো।
এর অধিকাংশেই কোন বিশেষ ঘটনা বা আচরণ বা বিষয়ের প্রেক্ষিতে ক-বাবু তাঁর নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন। ক্ষুরধার সে বক্তব্য, অতিরিক্ত একটা কথাও সেখানে নেই, এবং প্রায়ই তা প্রচল ধারণার বিপরীত মত ও পথের সন্ধানী। সঙ্গত অনুমান যে, ক-বাবুর বক্তব্য আসলে স্বয়ং লেখকেরই, ক-বাবু আসলে তিনি নিজেই।
রাজনীতি থেকে ঈশ্বর, প্রেম থেকে সত্যের স্বরূপ—সবই তাঁর আলোচ্য। ফলে দেশ-কালের গণ্ডিতে তা আটকে থাকে না। আর সে কারণেই এ সমস্ত কথা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। -
কবিতার কারখানা
আজ থেকে প্রায় অর্ধ-শতাব্দী কাল আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গনে শ্রোতাদের অভিভূত করেছিল আর্হেন্তিনীয় সাহিত্যিক হোর্হে লুইস বোর্হেস-এর অভিভাষণ যা পরবর্তীতে হারিয়ে যায়। সেই হারিয়ে যাওয়া মহামূূল্য অভিভাষণটিই ফিরে এসেছে আমাদের কাছে অডিও টেপ থেকে লিখিত রূপে। এ যেন সাহিত্যের সাথে, ইংরেজি ভাষার সাথে বোর্হেসের সারা জীবনের প্রেমের গল্প। অকপট, সুরেলা, বুদ্ধিদীপ্ত ও রসবোধে পরিপূর্ণ এবং একই সাথে অসাধারণ পান্ডিত্যপূর্ণ এক কণ্ঠস্বরকে আমরা এই বইতে পাই যা বিংশ শতকের সবচাইতে চমকপ্রদ সাহিত্যিক কণ্ঠস্বরগুলোর একটি।
-
তিনা মোদোত্তি শিল্প . রাজনীতি . জীবন
মৃত্যুর পর প্রায় চার দশক তিনা মোদোত্তি নামটি সর্বতোভাবে চাপা পড়ে থাকে। যা সর্বাংশে রাজনৈতিক, খানিকটা অবহেলারও। আশির দশকের গোড়া থেকে তিনা আবারও শিল্প-সংষ্কৃতি-রাজনীতির আলোচনায় ফিরে আসেন। ছেচল্লিশ বছরের আয়ুষ্কাল পেয়েছিলেন তিনা মোদোত্তি। এই অল্প সময়েই মঞ্চ ও চলচ্চিত্রাভিনেতা, আলোকচিত্রী এবং রাজনীতিক হিসেবে কর্মময় জীবন কাটিয়েছেন। ইতালিতে জন্মগ্রহণ করলেও, মেক্সিকোর শিল্প ও রাজনীতির ইতিহাসে তিনা অবিস্মরণীয়।
এই গ্রন্থটিতে তিনা মোদোত্তির বর্ণময় জীবন ও জীবনের সফলতা বা ব্যর্থতা বা প্রভাবসঞ্চারক হিসেবে তাঁর ভূমিকা ইত্যাদি কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উপরই আলোকপাত করা হয়নি সচেতনভাবে। বরং নির্মোহ জায়গা থেকে তাঁর জীবনের বিভিন্ন পর্যায়কে তুলে ধরা হয়েছে, বিস্মৃত একটি জীবনের দিকে ফিরে তাকালে যেভাবে দেখা হয়। -
পুণ্যাহ
আর দশটি সাধারণ নারীর জীবনের মতোই গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফারজানার জীবনের গল্প আবর্তিত হতে থাকে। অপ্রত্যাশিত বিপত্তি, অভাবিত মোড়, ধারণাবহির্ভূত অভিজ্ঞতা একের পর এক কড়া নাড়ছিল ফারজানার জীবন দুয়ারে। জীবনের এক পর্যায়ে পারিবারিক দ্বন্দ্ব-সংঘাতের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে বন্ধুত্বের সংস্পর্শে। শুধু কি বন্ধুত্ব? নাকি বন্ধুত্বের থেকেও বেশি কিছু? এখানে সংসারের অভ্যস্ততার খসড়া যেন চূড়ান্ত ক্লাইমেক্সে মোড় নেয়।
আপাত দৃষ্টিতে উপন্যাসের বিচ্ছিন্ন প্রত্যেকটি চরিত্র কীভাবে যেন মাকড়সার জালের মতো জড়িয়ে যায় পরস্পরের সাথে। এই চরিত্রগুলোর পরিণতি কী হবে? প্রাচী, মাহফুজ, ফারজানা, জোসেফ, শমিতা সবার জীবনে কি আসবে পুণ্যাহ?”
-
প্রেম ও হত্যা
‘প্রেম’ ও ‘হত্যা’ নিয়ে এই দুটি ছোট ছবি আদতে খ্রিস্তভ কিয়েসলোভস্কি পরিচালিত পোলিশ টেলিভিশনের জন্য তৈরি দশটি ছবির সিরিজ ‘ডেকালগ’-এর অন্তর্গত। তার মধ্যে এ দুটি ছবি (ডেকালগ ৫ ও ৬) একই সঙ্গে সামান্য পরিবর্তন সাপেক্ষে ‘আ শর্ট স্টোরি অ্যাবাউট লাভ’ এবং ‘আ শর্ট স্টোরি অ্যাবাউট কিলিং’ নামে স্বতন্ত্র দুটি কাহিনিচিত্র হিসেবেও নির্মিত হয়। এখানে প্রকাশিত দুটি চিত্রনাট্যই ঐ কাহিনিচিত্রের।
এই সংকলনে আরও আছে ‘ডেকালগ’ নিয়ে পরিচালকের দুটি সাক্ষাৎকার এবং আলাদা করে এ দুটি ছবি নিয়ে তাঁর বক্তব্য।
-
বীরাঙ্গনা: যুদ্ধকালীন ধষর্ণের নীতিসম্মত সাক্ষ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পারিবারিক স্মৃতি নিয়ে লাবণ্যকে একটা স্কুলের প্রজেক্ট করতে হবে। সে তার নানুর কাছে এই নিয়ে কথা বলতে আসে দুপুর বেলা। ও নানুর দুঃস্বপ্নের ঘুম ভাঙ্গায়। নানু যুদ্ধের এই দুঃস্বপ্ন বার বার দেখেন। ঘুম ভেঙ্গে নানু তাকে বীরাঙ্গনাদের ইতিহাস জানান। একাত্তরের যুদ্ধে পাকিস্তানের সৈন্যরা ও স্থানীয় রাজাকাররা যেসব মেয়েকে ধরে নিয়ে যায়, অত্যাচার করে, ধর্ষণ করে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার তাঁদের ‘বীরাঙ্গনা’ বলে সম্মান জানায়। লাবণ্যের মা হেনা তাকে কথ্য ইতিহাসের অভিজ্ঞতা জানান, যার মাধ্যমে তাঁরা বীরাঙ্গনাদের সাক্ষ্য সংগ্রহ করেছেন। সেই সাথে কথ্য ইতিহাসের নানাবিধ নৈতিক টানাপড়েনের এবং যে ভুলগুলো তিনি করেছেন তার কথা বলেন। হেনার মনে হয়: যুদ্ধে ধর্ষণের শিকার নারীদের সাক্ষ্য সংগ্রহের জন্য প্রয়োজন একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা, যা তাদের নানা ভুল-ত্রুটি, দৃঢ় নৈতিক অবস্থানের কথা মনে করিয়ে দেবে। কিন্তু এই নীতিমালার কথোপকথনের মধ্যে লুকিয়ে আছে লাবণ্যের পারিবারিক ইতিহাস ও গোপনীয় বিষয়। কী সেই গোপন থাকা কথা? এই কাহিনী আবিষ্কার করে লাবণ্যের কী অনুভূতি হয়? সে ভবিষ্যতে এই পারিবারিক ও দেশের ইতিহাসকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে?
-
মুক্তির জন্য সাংস্কৃতিক প্রয়াস
৭০’র দশকে হার্ভার্ডের এডুকেশনাল রিভিউয়ের জন্য লিখিত পাউলো ফ্রেইরির দুইটি নিবন্ধ নিয়ে পরবর্তী কালে কালচারাল অ্যাকশন ফর ফ্রিডম বইটি প্রকাশিত হয়। যা ‘পেডাগজি অব দ্য অপ্রেসড’ বইয়েরই এক প্রকার ধারাবাহিকতা। শিক্ষাচিন্তা, অধ্যয়নের দর্শন, রাজনীতি, অর্থনীতি’র বোঝাবুঝি এই বইয়ের মূল উপাদান।
পাউলো-র শিক্ষাচিন্তার মূল কথা হলো প্রতিটি মানুষ এক-একটি স্বতন্ত্র স্বাধীন সত্তা, যিনি পৃথিবীকে পরিবর্তন করতে পারেন এবং নতুন করে গড়তে পারেন। মানুষের চেতনা রূপ পায় আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি আর মানুষটির নিজস্ব পারিপার্শ্বিকের প্রভাবে। তত্ত্ব-কর্ম-সমন্বয়ী বিশ্লেষণী চেতনা মানুষকে ভাবনা থেকে কাজে অগ্রসর হতে শেখায়। শোষকের আরোপিত নৈঃশব্দ্যের সংস্কৃতি নিপীড়ন জারি রাখতে সাহায্য করে এবং মিথ্যা কিছু ভাবনার মধ্যে মানুষকে আটকে রাখে। সেই নৈঃশব্দ্য ভাঙতে পারে একমাত্র শিক্ষা।
আর এই বই আমাদের সেই বিশ্লেষণী চেতনায়নের মাধ্যমে বাস্তব জীবনে মুক্তি অর্জনের পথ করে নেওয়া শেখায়। -
মেয়েদের হার মেয়েদের জিত
আমার বয়স যখন ছিল তিরিশ, তখন যদি কেউ বলত যে আমার নারী-সমস্যা নিয়ে লেখা উচিত, এবং আমার সমস্ত সিরিয়াস পাঠকই মেয়েরা, তবে আমি বিস্মিত হতাম, এমনকি বিরক্ত হতাম। শেষ পর্যন্ত যে তা-ই হল, এতে আমার কোনো অনুশোচনা নেই। খণ্ডিত, বিক্ষত যে-জগৎ তাদের অসুবিধার মধ্যে ফেলেছে, সেখানে তাদের জয় করার আছে অনেক লড়াই, পাওয়ার আছে অনেক পুরস্কার, যন্ত্রণার জন্যেও আছে অনেক পরাজয়-পুরুষদের যা নেই।
মেয়েদের আমি দেখতে শুরু করলাম নতুন দৃষ্টিতে, আর দেখলাম যে আমার জন্য সেখানে পর-পর একাধিক বিস্ময় অপেক্ষা করে আছে। চল্লিশ পেরিয়ে জগতের এমন একটা দিক হঠাৎ আবিষ্কার করাটা যেমন আশ্চর্যের, প্রায় তেমনই উদ্দীপনার। তোমার দিকে সরাসরি সব সময়ে তাকিয়ে আছে তা, অথচ যা তুমি আগে কখনও খেয়াল করে দেখোনি। -
স্বপ্ন বিপ্লব ও শ্রেণিসুবিধা
বিংশ শতাব্দীর তরুণ প্রজন্ম বার বার স্বপ্ন দেখেছে—সাম্যের স্বপ্ন, স্বাধীনতার স্বপ্ন। আর তাই অনিবার্যভাবে বিপ্লবের স্বপ্নও দেখেছে তারা। তাদের সে স্বপ্নকে নিঃসন্দেহে আরও বেগবান করেছিল রুশ বিপ্লব।
কিন্তু এ-ও সত্য, এক শতাব্দী পেরুতে না পেরুতেই কি সামন্তবাদী, কি পুঁজিবাদী-বৈষম্য ও শোষণময় সব রকমের সমাজব্যবস্থার নাভিশ্বাস তোলা এই বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে গড়ে ওঠা সমাজতান্ত্রিক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়েছিল।
এতে সংশয় নেই যে, রুশ বিপ্লব দ্বিতীয়বার হবে না; কিন্তু এ-ও সত্য যে, মানুষের সাম্য ও সমতার চিরন্তন আকাঙ্ক্ষার কারণেই আরও নির্ভুল প্রস্তুতি নিয়ে ভবিষ্যতেও সমতার গান বেজে উঠবে এবং নতুন কোনো বিপ্লব নিশ্চয়ই ঘটবে।